শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪, ২০ বৈশাখ, ১৪৩১
অনলাইন ডেস্ক।।
রাজশাহীতে করোনা সার্টিফিকেট প্রতারণাচক্রের মূলহোতা রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসানসহ (৪১) তিনজনকে গ্রেফতার করেছে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। বুধবার (০৭ জুলাই) দিবাগত রাতে এবং বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) সকালে তাদের গ্রেফতার করে রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখা।
গ্রেফতার তিনজনসহ প্রতারকচক্রের ১৫-২০ সদস্য গত চার মাসে মোটা অঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। প্রতারকচক্রের সদস্যদের দ্বারা বিদেশগামী অসংখ্য মানুষ প্রতারিত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার দুপুরে আরএমপি গোয়েন্দা কার্যালয়ে উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল প্রেস ব্রিফিংয়ে এসব তথ্য জানান।
তারেক আহসান ছাড়াও গ্রেফতার হওয়া অন্য দুজন হলেন— রাজশাহী বক্ষব্যাধি হাসপাতালের গাড়িচালক রফিকুল ইসলাম (৪২) এবং তার স্ত্রী শামসুন্নাহার ওরফে শিখা (৩৮)। বুধবার দিবাগত গভীর রাতে রফিকুল এবং শিখাকে তাদের হেতমখাঁ এলাকার বাড়ি থেকে গ্রেফতার করা হয়। একই এলাকাতে বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে তারেক আহসানকেও গ্রেফতার করা হয়। তারেক মহানগরীর কাটাখালীতে কাপাসিয়া এলাকার বাসিন্দা।
তাদের গ্রেফতারের পর প্রেস ব্রিফিংয়ে উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল জানান, সরকারের উচ্চপর্যায়ের একটি গোয়েন্দা সংস্থার তথ্যের ভিত্তিতে করোনা সার্টিফিকেট জিম্মিকারী প্রতারকচক্রের ব্যাপারে ডিবি পুলিশ তদন্ত শুরু করে। এর পর এ চক্রের সন্ধান পাওয়া যায়। মূলত রাজশাহী সিভিল সার্জন কার্যালয় কেন্দ্র করে এ প্রতারকচক্রটি তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল।
তিনি আরও জানান, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের অফিস সহকারী তারেক আহসান বক্ষব্যাধি হাসপাতালের গাড়িচালক রফিকুলের কাছে বিদেশগামী ব্যক্তিদের করোনা টেস্টের তথ্য সরবরাহ করতেন। এর পর রফিকুলের স্ত্রী শিখা টেস্টের ফরমে উল্লেখ করা মোবাইল নম্বরে ফোন দিতেন।
ডিবি কার্যালয়ে গ্রেফতারকৃতদের জিজ্ঞাসাবাদে রফিকুলের স্ত্রী শিখা জানান, ফোন করে টেস্টের জন্য স্যাম্পল দেওয়া ব্যক্তিদের রিপোর্ট পজিটিভ এসেছে বলে জানাতেন তিনি। এর পর তাদের রিপোর্ট নেগেটিভ দেওয়া হবে এমন কথা বলে যোগাযোগ করতে বলতেন তারা।
সেখানে আরেফিন জুয়েল জানান, যেসব ব্যক্তিকে ফোন দেওয়া হতো, তাদের সবার রিপোর্টই সার্টিফিকেটে নেগেটিভ থাকত। মিথ্যা তথ্য দিয়ে তাদের কাছে তিন থেকে ১৫ হাজার পর্যন্ত টাকা নেওয়া হতো। দ্রুত নেগেটিভ রিপোর্ট পাওয়ার জন্য বিদেশগামীরা ওই চক্রের কাছে টাকা দিতেও বাধ্য হতেন।
এদিকে বৃহস্পতিবার দুপুরে গ্রেফতারকৃত তিনজনসহ আরও অজ্ঞাত তিনজনের বিরুদ্ধে প্রতারণামূলক মামলা করা হয়েছে। তাদের আদালতে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে। আর এ প্রতারকচক্রের আরও সাত থেকে আটজন সদস্যকে শনাক্ত করা হয়েছে। তাদের গ্রেফতার লক্ষ্যে মাঠে নেমেছে গোয়েন্দা পুলিশ।